Sunday, April 18, 2010

জামায়াতের একটি ফ্রন্ট হয়ে গেল বিএনপি

জামায়াতের একটি ফ্রন্ট হয়ে গেল বিএনপি
সংবাদ ভাষ্য
মুনতাসীর মামুন ॥ অবশেষে সব লুকোচুরি শেষ। রহস্যময় কথাবার্তা, রহস্যময় আচরণ, সবই শেষ হলো। বিএনপি এবং জামায়াত যুদ্ধাপরাধ বিচারে তাদের নিজ নিজ অবস্থান পরিষ্কার করল। আমরা যা অনুমান করেছিলাম, তাই হলো। এর অন্যথা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মাঝে মাঝে বিএনপির কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল হয়ত তৃণমূলের চাপে তারা বাসত্মবে, মানবতাবাদী ধারায় ফেরত আসবে। কিন্তু তা হয়নি। বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব থাকতে তার কোন সম্ভাবনা নেই।
প্রায় সময় মৌতাতে থাকা, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, "দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারীভাবে যাদের যুদ্ধাপরাধী বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের তৎকালীন আওয়ামী সরকারই মুক্তি দিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামী লীগ সরকারই করেনি। এটাই ঐতিহাসিকভাবে সত্য। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের নামে রাজনৈতিক প্রতিপৰকে দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।" [প্র. আলো. ৩.৪.২০১০]
মাথাখালি নামে [বহুল] পরিচিত, এমকে আনোয়ার জানিয়েছেন, "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মানবতাবিরোধী হলে বিএনপি প্রতিহত করবে।" [ভোরের কাগজ ৪.৪.১০]
আমরা বুঝতে অৰম, যুদ্ধাপরাধ/মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হলে বিএনপির সমস্যাটা কোথায়? তাদের আরেকটি অভিযোগ, এই ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে রাজনৈতিক হয়রানি করা হবে। এই যুক্তি বুঝতেও আমরা অৰম। ধরা যাক, আপনার দলে অনেক চোর ডাকাত ধর্ষক ঢুকে পড়েছে। আইন অনুযায়ী তাদের বিচার হওয়া জরুরী। জনস্বার্থে আপনি তাদের বহিষ্কার করবেন, না আঁকড়ে ধরবেন? সে রকম বিএনপিতে যদি যুদ্ধাপরাধী থেকে থাকে তাদের বহিষ্কার করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়।
আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধের বিচার করবে বলে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করছে এটি ঠিক নয়, এটি তাদের নির্বাচন ম্যানিফেস্টোতে ছিল না। এ প্রচার সর্বৈব মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
যে আইনে বিচারের কথা হচ্ছে তার নাম_ 'আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩।' "জাতীয় সংসদ প্রণীত নিম্নবর্ণিত আইন ১৯৭৩ সালের ১৯ জুলাই রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সম্মতিদানকৃত এবং এতদ্দ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশিত হলই।
১৯৭৩ সালের ১৯ নং আইন
আন্তর্জাতিক আইনের অনুসরণে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক, বিচার এবং শাস্তি প্রদানের যথোচিত ব্যবস্থা করার জন্য আইন"...
সংবিধানের ৪৭/১ এ ধরনের আইনের 'হেফাজত' করা হয়েছে এবং স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে_ "এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরৰা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারীতে সোপর্দ কিংবা দণ্ড দান করিবার বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না কিংবা কখনও বাতিল বা বেআইনী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না।"
মানবতাবিরুদ্ধ অপরাধসমূহ বা যুদ্ধাপরাধ বলতে কী বুঝব তা বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানীর 'আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ সহজ পাঠ' পুস্তিকায় সহজভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে__
"মানবতাবিরুদ্ধ অপরাধসমূহ : যথা, বেসামরিক জনসমষ্টির যে কাহারো বিরুদ্ধে কৃত নরহত্যা, উচ্ছেদ, ক্রীতদাসতুল্য জবরদস্তি, বিতাড়ন, কয়েদ, অপহরণ, আটক, শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ কিংবা অপর মানবিক কার্যসমূহ কিংবা রাজনৈতিক, গোষ্ঠীগত, উপজাতিগত বা ধর্মীয় কারণে শাস্তি প্রদান যেখানে অপরাধ সংঘটন হইয়াছে তাহা সে স্থানের প্রচলিত আইনবিরুদ্ধ হোক কিংবা না হোক।"
"যুদ্ধাপরাধ : যথা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে যুদ্ধের আইন কিংবা প্রথা ভঙ্গ করিয়া_ যাহার অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু সীমিত অর্থে নহে__ বেসামরিক জনসমষ্টির বিরুদ্ধে নরহত্যা, নির্যাতন, জবরদস্তি-শ্রমে স্থানান্তরিত কিংবা অন্য কোন উদ্দেশ্য সাধন করা; যুদ্ধবন্দীদেরকে কিংবা সাগরে অবস্থানরত ব্যক্তিদেরকে হত্যা কিংবা নির্যাতন করা, সরকারী কিংবা বেসরকারী সম্পত্তি লুটতরাজ করা, সামরিক নিরস্ত্রয়ানে নির্বিচার নগরগুলি, শহরগুলি কিংবা গ্রামগুলি ধ্বংস করা কিংবা বিধ্বস্ত করা।"
বিএনপি 'ট্রাইব্যুনালস', 'যুদ্ধাপরাধ' ও 'সংবিধান' নিয়ে প্রশ্ন তুলে এখন বলছে, এগুলো যথাযথ নয় এবং 'মানবতাবিরোধী অপরাধে' বিচার করার অর্থ হচ্ছে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসা এবং রাজনৈতিক উইচ হান্টিং।
এসব অভিযোগের কোনটাই সত্য নয়। এ ট্রাইব্যুনাল ও বিচার করার অধিকার সংবিধান প্রদত্ত। এবং আইনটি হয়েছে ১৯৭৩ সালে তখন বিএনপি হয়নি এবং ধর্মব্যবসায়ীদের দল হিসেবে জামায়াত ছিল নিষিদ্ধ। 'যুদ্ধাপরাধ' ও মানবতাবিরোধী' অপরাধসমূহ প্রায় একই ধাঁচের। আসলে বিএনপি যেটা ভাবছে তা হলো, এই ধারায় জোট আমলের তাদের কৃত অপরাধগুলোর বিচার যদি করা হয় তা হলে তারা ফেঁসে যেতে পারে। বর্তমান নেতৃত্বের ভয় এটি। বিএনপির অনেক নীতিনির্ধারককে বলতে শুনেছি, আইনমন্ত্রী, এ্যাটর্নি জেনারেল আমেরিকা থেকে ফেরার পর সরকার সুর পাল্টে ফেলছে। অর্থাৎ আমেরিকার পরামর্শে তারা এসব করছে। লৰণীয় ঐ দু'জনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নরও গিয়েছিলেন এবং মূল উদ্দেশ্য ছিল, অনুমান করছি, বেগম জিয়ার দু'পুত্র যে টাকা পাচার করেছেন তার প্রমাণ সংগ্রহ করা। নয়ত, তাদের সঙ্গে গবর্নরের যাওয়ার কথা নয়। বিএনপি এ বিষয়টিকেই ধামাচাপা দিতে যাচ্ছে এসব মনত্মব্য করে। বিএনপির বর্তমান কর্তাদের একমাত্র লৰ্য হচ্ছে বেগম জিয়া ও তার দুই পুত্রকে সব রকমের সুরৰা দেয়া। এতে দল ৰতিগ্রসত্ম হলেও তাদের কিছু আসে-যায় না। আরও উল্লেখ্য, আইনমন্ত্রীকে আমি টেলিভিশনে বলতে শুনেছি, ১৯৭১ সালে কৃত অপরাধের বিচার হবে। সে সময় তো বিএনপি ছিল না। সুতরাং তাদের সমস্যা কী? একমাত্র সমস্যা তাদের দলের নেতৃস্থানীয় কয়েকজন ১৯৭১ সালে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কয়েকজনকে রৰা করার জন্য বিএনপি এখন যুদ্ধাপরাধ বিচারের সমালোচনা করছে। অর্থাৎ, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় এগিয়ে আসছে। দেখা যাচ্ছে, বিএনপির ক্ষেত্রে দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়।
অথচ, অপনারা কি বিশ্বাস করবেন যে, মাত্র একদশক আগে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুধু নয়, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছিল। আমরা পুরনো কথা ভুলে যাই দেখে বর্তমানে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হয়।
এর প্রমাণস্বরূপ আমি কিছু উদাহরণ তুলে ধরছি_ আমি নিশ্চিত এগুলো পড়লে অপনারা যারপরনাই বিস্মিত হবেন। এগুলো মনগড়া নয়। ১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে মুলতবি প্রস্তাব আলোচনাকালে এসব মন্তব্য করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সংসদে মুলতবি প্রস্তাব তোলেন_ "রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুমন্ত ছাত্রদের ওপর নিশুতি রাতে জামায়াত শিবিরের নারকীয় তা-বে নিহত জোবায়েদ চৌধুরী রীমু [বিএনপি নেত্রীর পুত্র] হত্যাকাণ্ড এবং শতাধিক আহত ছাত্রদের আর্তনাদ বিষয়ক আলোচনা এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে আইনগত ব্যবস্থা অবলম্বনের স্বার্থে অবিলম্বে সংসদ মুলতবি করা হোক।"
সংসদ মুলতবি করা হয়। এরপর ৩২ জন সংসদ সদস্য এ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন। এর মধ্যে ১৭ জন বিএনপির। ১০ জন আওয়ামী লীগের। বাকিরা আনি-দুয়ানি দলের। এবার বিএনপির কয়েকজন সংসদ সদসের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিচ্ছি_
১। "আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা।...রাজাকাররা জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় আমার ৬২ বছরের পিতাকে বেত্রাঘাত করেছিল...আজকেও সেই রাজাকাররা, সেই আলবদররা এখনও বাংলাদেশে বেঁচে আছে, তাদের সনত্মানরা তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমার সন্তানদেরকে গলা কাটে আর রগ কাটে।...তাই আজ এই রাজাকার আলবদর আর জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।" আবদুল আলী মৃধা [নরসিংদী-৫]
২।"...দেশের প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ উপলব্ধি করছে যে, জনগণের বিরুদ্ধে যারা রাজনীতি করে, যারা হানাদার বাহিনীর সাথী হয়ে এদেশের মা-বোনদেরকে নির্যাতন করেছে, তাদেরকে আইনগতভাবে রেহাই দেয়া সত্যিকারভাবে আজকে জাতির জন্য একটি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই আমি আশা করব অতীতের ভুলকে শুধরিয়ে আজকে যারা ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করতে চায়, আজকে যারা এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়েছে, এ জামায়াত শিবিরের রাজনীতিকে চিরতরে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি আপনাদের কাছে দাবি জানাব।"
মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, বীরবিক্রম (ভোলা-৩)
৩। "...আজকে আমরা সারা বাংলাদেশে দেখছি এ জামায়াত শিবির জঘন্য ভাষায় ইসলামকে অপব্যাখ্যা করে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্তির মাঝে ফেলে দিয়ে যে সন্ত্রাসের রাজনীতি, মিথ্যার বেসাতির রাজনীতি তারা সারা বাংলাদেশে কায়েম করেছে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, গত নির্বাচনের সময় তাঁরা মেয়েলোকদের ভোট দিলে বউ তালাক হয়ে যাবে এ ফতোয়া দিয়ে বেড়িয়েছে যে মেয়েলোকের পিছনে রাজনীতি করলে এ দেশের প্রতিটি মানুষ নরকে চলে যাবে, দোজখে চলে যাবে। এমনিভাবে তারা ইসলামকে অপব্যাখ্যা করে। ইসলামের অসত্য ব্যাখ্যা করে তারা এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের বিপথগামী করে ইসলামের প্রতি বিতৃষ্ণার সৃষ্টি করছে।
...ওদের রাজনীতি যদি দমন না করা যায় তা'হলে আগামী দিনে এই গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের রাজনীতি এদেশে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।"
মশিউর রহমান (ঝিনাইদহ -২)
৪। "গোলাম আযমের বংশধররা এ দেশে কী করতে পারে আমরা অনেকেই ভুলে গিয়েছিলাম, এই কিছুদিন আগেও যখন বলেছিলাম এই গোলাম আযমকে বাংলাদেশে রাখলে বাংলাদেশের পরিণতি খারাপ হবে, আজকে সেটা প্রমাণিত হতে যাচ্ছে... আজকে তাই এই হাউস থেকে এই দিক থেকে, ঐ দিক থেকে প্রস্তাব এসেছে, জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এরপরেও কি মাননীয় স্পীকার, আমরা এই সংসদে জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রস্তাব নিতে পারব না?"
শাজাহান সিরাজ (টাঙ্গাইল-৪)
৫। "এদের অস্ত্রের উৎস কোথায় এসব জাতির সামনে আসা দরকার, না হলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাবে এবং ভবিষ্যতে এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব তাদের দ্বারা বিপন্ন হতে পারে।"
আলমগীর কবির (নওগাঁ-৬)
[বিস্তারিত তথ্য এএসএম সামশুল আরেফিন সম্পাদিত 'জামায়াতে ইসলাম নিষিদ্ধ হোক']
একই কা- ঘটিয়েছে জামায়াত কিছুদিন আগে। এখন তারা এ বিষয়ে শুধু নিশ্চুপ নয়, নিজামী, মুজাহিদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাবার জন্য মাঠে নেমেছে।
একদশক আগে যারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন, একদশক পর তারা তাদের সঙ্গে সরকার গড়লেন। তা'হলে এসব রাজনীতিবিদের চরিত্রের দৃঢ়তা সম্পর্কে সন্দেহ থেকে যায়। বিএনপি যা বলেছিল তাই যদি করত এবং এখনও তা মনে করত। তা হলে বলা যেত রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের কমিটমেন্ট আছে। এখন দেখা যাচ্ছে তা নেই। একদশক আগে তারা যা বলেছিল আজ তাদের স্থান এর বিপরীত। অর্থাৎ এরা নিজেদের সুবিধার জন্য যা খুশি বলতে পারে, করতে পারে, মিথ্যা বলতে পারে। যেমন বলেছিলেন বেগম জিয়া যে, শান্তিচুক্তির পর ফেনী পর্যন্ত ভারতের অন্তর্গত হয়ে যাবে বা আওয়ামী লীগ ৰমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে। একজন মহিলা কীভাবে সত্য নয় এমন কথা বলেন?
একদিক থেকে ভালই হয়েছে। বিএনপির বর্তমান চরিত্র স্পষ্ট হয়ে গেছে। এরা জামায়াতের একটি ফ্রন্ট। শুধু তাই নয়, এটি চরম সুবিধাবাদী একটি দল যাদের কাছে আদর্শ, কমিটমেন্ট থেকে ব্যক্তি বড়। সুতরাং দেশে যদি যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধের জন্য তারা অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করে তা হলে অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়ার জন্য তাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। আফসোস এ কারণে যে, যারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতার জন্য বিএনপিতে যোগ দিয়েছিল আজ বিএনপির নেতারা তাদের কাঁধে যুদ্ধাপরাধের দায় চাপিয়ে দিচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নষ্ট করছে। বিএনপি যুদ্ধাপরাধের দায় নেবে কিনা এটি চিরচেনা মওদুদ আহমদ, সাকাচৌর হাতে ছেড়ে না দিয়ে তৃণমূলের যুবকদের ঠিক করা উচিত তাদের ভবিষ্যত কী হবে?

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2010-04-16&ni=14985

No comments: