Monday, April 19, 2010

আল কায়েদার পরবর্তী টার্গেট ॥ বাংলাদেশ


০ হামলার জন্য ব্যবহার হবে বিমান
০ বাংলাদেশে এ হামলায় সহযোগিতা করবে জামায়াত ও হুজি
০ বিশ্বের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ তথ্য জানিয়েছে
গাফফার খান চৌধুরী ॥ বাংলাদেশে ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদা। আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের পর এবার আল কায়েদার টার্গেট বাংলাদেশ। হামলা সফল করতে আল কায়েদাকে সহযোগিতা করছে জামায়াতে ইসলামী, হুজি ও জেএমবি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এক সম্মিলিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের একটি কপি বিশেষ ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে ভারত সরকারকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরকে সীমান্তে অতিশক্তিশালী সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সরকার সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ জারি করেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে এক অতিজরুরী গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় দিল্লীর সাইমুন প্লাজায় ওই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে কয়েক ঘণ্টা। বৈঠকে ১শ' ১১ জন শীর্ষ গোয়েন্দা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এসব গোয়েন্দারা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন। তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। ওই বৈঠকে যাঁরা অংশগ্রহণ করেন তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুধু জঙ্গীদের ওপর কাজ করেন। ভারতের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা ওই বৈঠকের আয়োজন ও সমন্বয় করে। বৈঠকে অংশ গ্রহণকারী গোয়েন্দারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জঙ্গীদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি সম্পর্কে বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করেন। বৈঠকে আল কায়েদার ওপর বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বৈঠকে গোয়েন্দারা আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার পাশাপাশি হুজি ও জেএমবির ভবিষ্যত কার্যক্রম ও পরিকল্পনার ওপর বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, হুজি ও জেএমবি আল কায়েদার সহযোগী সংগঠন। তবে আল কায়েদার ওপর বিস্তারিত বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলার পরিকল্পনা অব্যাহত থাকবে। এসব দেশে নিয়মিতভাবে আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আল কায়েদার পরবর্তী টার্গেট। সেক্ষেত্রে আল কায়েদা বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর হামলা চালাবে। হামলার জন্য ব্যবহার করা হবে বিমান। এসব বিমান বাংলাদেশ বা পার্শবর্তী কোন দেশ থেকে ছিনতাই করা হতে পারে। বাংলাদেশে আল কায়েদার হামলা বাস্তবায়ন করতে জামায়াতে ইসলামী, হুজি ও জেএমবি সহযোগিতা করবে।
প্রতিবেদনে জামায়াতে ইসলামীকেও জঙ্গী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ তিনটি সংগঠন বাংলাদেশে আল কায়েদাকে হামলার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। হামলা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে সীমান্তসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী, জেএমবি ও হুজির কেউ কেউ হামলায়ও অংশ নেয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে সীমান্তে অতিশক্তিশালী মুভি ও সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরকেও। বিডিআরকে অতিদ্রুত সীমান্তে শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়েছে। নতুবা আরও আন্তর্জাতিক মানের জঙ্গী বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এখনও বহু জঙ্গী সীমান্তপথে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা নানাভাবেই চেষ্টা করছে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য। বিডিআর হত্যাযজ্ঞের পর সীমান্ত অনেকটাই রক্ষিত হয়ে পড়েছিল। ওই সময় সুযোগ বুঝে বাংলাদেশে বহু বিদেশী আন্তর্জাতিক মানের জঙ্গী ঢুকে পড়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী গোয়েন্দাদের তৈরি প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও জানানো হয়। পরবর্তীতে প্রতিবেদনের একটি কপি গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকার বরাবর পাঠানো হয়। প্রতিবেদনের কপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিডিআর, পুলিশ, RAB সহ প্রতিটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারসহ সারাদেশে নীরব রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2010-04-19&ni=15332

No comments: