মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মানচিত্ররাজাকার, নির্যাতনচিত্র উধাও
তানিয়া লাবণ্য, মেহেরপুর
'কালের কন্ঠ'
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর লাভ করে অস্থায়ী রাজধানীর মর্যাদা। মেহেরপুর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে মুজিবনগর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। এখান থেকেই সেই সরকার দক্ষ মেধায় দেশ পরিচালনা করে। দখলদার পাকিস্থানি সেনাবাহিনী এ দেশীয় দোসর রাজাকার আল-বদর আল-শামসের বিরুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী বীরত্বপূর্ণ লড়াই শেষে ছিনিয়ে আনে বিজয়-সূর্য।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ঐতিহাসিক মুজিবনগরের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। শুরু হয় মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মানচিত্র ও জাদুঘর নির্মাণের কাজ। তবে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয় রাজাকার আল-বদরের নির্যাতনচিত্রের অধ্যায়টি।
২০০১ সালে ৪৫ কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার টাকার 'মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মানচিত্র' প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায়। মুক্তিকামী জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শপথ গ্রহণ, ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাসমৃদ্ধ তথ্য এবং নিদর্শন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের মানচিত্র নির্মাণ, মানচিত্রটিকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাচিত্র, মানচিত্রে যুদ্ধকালে দেশের চারটি পথ দিয়ে শরণার্থী গমন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ধ্বংস, আ স ম আব্দুর রবের পতাকা উত্তোলন, শাজাহান সিরাজের ইশতেহার পাঠ, জাতীয় শহীদ মিনার ধ্বংস, সচিবালয়ে আক্রমণ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ, জাতীয় প্রেসক্লাব ধ্বংস, তৎকালীন ইপিআর পিলখানা আক্রমণ, রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও বুদ্ধিজীবী হত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বংলাদেশের মানচিত্রের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারদের ভূমিকার কোনো দৃশ্য।
এ বিষয়ে প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য রাজাকার আল-বদরের প্রতিকৃতি থাকা অবশ্যই জরুরি। গত জোট সরকার এসব প্রতিকৃতি বাদ দিয়েছে। তবে এখন প্রকল্পটি অতিদ্রুত যাচাই করা উচিত, যাতে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রকাশ পায়।' ভাস্কর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের প্রধান ভাস্কর গোপালচন্দ্র পাল বলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর পাশাপাশি তাদের দোসর রাজাকারের ভাস্কর্য রাখা উচিত ছিল।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম গত বছর মুজিবনগর 'মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মানচিত্র' পরিদর্শনে এলে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো সময় আছে।'
http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=single&pub_no=137&cat_id=1&menu_id=56&news_type_id=1&index=0
তানিয়া লাবণ্য, মেহেরপুর
'কালের কন্ঠ'
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর লাভ করে অস্থায়ী রাজধানীর মর্যাদা। মেহেরপুর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে মুজিবনগর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। এখান থেকেই সেই সরকার দক্ষ মেধায় দেশ পরিচালনা করে। দখলদার পাকিস্থানি সেনাবাহিনী এ দেশীয় দোসর রাজাকার আল-বদর আল-শামসের বিরুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী বীরত্বপূর্ণ লড়াই শেষে ছিনিয়ে আনে বিজয়-সূর্য।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ঐতিহাসিক মুজিবনগরের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। শুরু হয় মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মানচিত্র ও জাদুঘর নির্মাণের কাজ। তবে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয় রাজাকার আল-বদরের নির্যাতনচিত্রের অধ্যায়টি।
২০০১ সালে ৪৫ কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার টাকার 'মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মানচিত্র' প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায়। মুক্তিকামী জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শপথ গ্রহণ, ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাসমৃদ্ধ তথ্য এবং নিদর্শন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের মানচিত্র নির্মাণ, মানচিত্রটিকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাচিত্র, মানচিত্রে যুদ্ধকালে দেশের চারটি পথ দিয়ে শরণার্থী গমন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ধ্বংস, আ স ম আব্দুর রবের পতাকা উত্তোলন, শাজাহান সিরাজের ইশতেহার পাঠ, জাতীয় শহীদ মিনার ধ্বংস, সচিবালয়ে আক্রমণ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ, জাতীয় প্রেসক্লাব ধ্বংস, তৎকালীন ইপিআর পিলখানা আক্রমণ, রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও বুদ্ধিজীবী হত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বংলাদেশের মানচিত্রের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারদের ভূমিকার কোনো দৃশ্য।
এ বিষয়ে প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য রাজাকার আল-বদরের প্রতিকৃতি থাকা অবশ্যই জরুরি। গত জোট সরকার এসব প্রতিকৃতি বাদ দিয়েছে। তবে এখন প্রকল্পটি অতিদ্রুত যাচাই করা উচিত, যাতে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রকাশ পায়।' ভাস্কর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের প্রধান ভাস্কর গোপালচন্দ্র পাল বলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর পাশাপাশি তাদের দোসর রাজাকারের ভাস্কর্য রাখা উচিত ছিল।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম গত বছর মুজিবনগর 'মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মানচিত্র' পরিদর্শনে এলে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো সময় আছে।'
http://www.dailykalerkantho.com/?view=details&type=single&pub_no=137&cat_id=1&menu_id=56&news_type_id=1&index=0
No comments:
Post a Comment