Tuesday, April 20, 2010

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
আবদুল মান্নান
হলফ করে বলতে পারি বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কোস্টারিকা নামক দেশটির নাম শোনেননি আর শুনলেও সে দেশটি যে কোথায় তা হয়ত বলতে পারবেন না। এর অন্যতম কারণ দেশটির সঙ্গে আমাদের তেমন কোন ক্থটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সম্ভবত উভয় দেশে পরস্পরের কোন দূতাবাসও নেই। তেমন একটি দেশ ২০০৯ সালে পৃথিবীর সব চাইতে সুখী দেশ হিসেবে নির্বাচিত হলো। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানের মতো আমাদের স্বপ্নের সব হেভিওয়েট দেশকে পেছনে ফেলে সুখের দেশের তালিকায় একেবারে এক নম্বরে।
কোস্টারিকার অবস্থান মধ্য আমেরিকায়, নিকারাগুয়া আর পানামার মাঝামাঝি। একান্ন হাজার বর্গমিটার দেশটির মোট জনসংখ্যা সাড়ে চল্লিশ লাখের মতো। আমাদের ঢাকার এক তৃতীয়াংশ। মাথাপিছু আয় দশ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি। জীবনে প্রথম ও একমাত্র কোস্টারিকানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল ২০০১ সালের নবেম্বর মাসে বরফপড়া এক অপরাহ্নে সুদূর অস্ট্রিয়ার শহর সলজবার্গে। এই কোস্টারিকান কিন্তু সে দেশের সাধারণ কোন নাগরিক নন, একেবারে উপ-রাষ্ট্রপতি এলিজাবেথ ওডিও বেনিটো। সঙ্গে তাঁর ফুটফুটে একেবারে পুতুলের মতো দু'টি যমজ শিশুকন্যা। এলিজাবেথ এখনও অনায়াসে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। বিজয়ী হতেও তেমন কোন বাধা অতিক্রম করার কথা নয় । এসেছিলেন তিনি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তাঁর দেশের নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে । এ সম্মেলনে বাইশটি দেশের পঞ্চাশ জন আলোচক অংশ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র অংশগ্রহণকারী আমি। সম্মেলনের মূল বিষয় নতুন বিশ্ব গড়তে সঠিক নেতৃত্বের ভূমিকা ও সন্ধান । প্রথম দিন পরিচয় পর্বের শেষে এলিজাবেথ নিজেই এসে আমার সঙ্গে আলাপ জুড়ে দিয়েছিলেন এবং তার বাংলাদেশ সম্পর্কে আগ্রহ আমাদের ড. ইউনূসের কারণে । তখনও ড. ইউনূস নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হননি। তাঁর নাম দৰিণ আমেরিকা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে । যখন জানলেন ড. ইউনূসের সঙ্গে আমার পরিচয় একেবারেই একান্ত, অনেকটা পারিবারিক, তখন মনে হলো এলিজাবেথের কাছে আমার কদরটা কিঞ্চিত বেড়ে গেল। অনুরোধ করলেন আমি যেন প্রথম সুযোগেই ড. ইউনূসকে তাঁর শুভেচ্ছাটা পৌঁছে দেই। তা দিয়েছিলাম কয়েক মাস পর ইউনূস ভাইয়ের সঙ্গে এক সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হলে। ইউনূস ভাইও পাল্টা তার শুভেচ্ছা জানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মাধ্যমে। কোস্টারিকার সঙ্গে ওটাই আমার সর্বশেষ যোগসূত্র। মাঝে মধ্যে ফুটবল খেলা নিয়ে তাদের দু'একটা সংবাদ চোখে পড়লেও তা তেমন গুরুত্ব দেইনি। যখন যুক্তরাজ্যভিত্তিক নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশন (New Economic Foundation) সম্প্রতি সারাবিশ্বের সুখী বিশ্ব সূচক ২০০৯ (২০০৯ Happy Plummet Indese) ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে দিল তখন হঠাৎ করে কোস্টারিকার নামটি আবার সামনে চলে এল। এক শ' তেতাল্লিশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান একত্রিশতম। দেশের মানুষ মালয়েশিয়া (৩৩), ভারত (৩৫), থাইল্যান্ড (৪১), ব্রিটেন (৭৪), জাপান (৭৫), যুক্তরাষ্ট্র (১১৪) থেকে বেশি সুখী। অন্তত এই সংস্থার পন্ডিত গবেষকরা তাই বলছেন। সব চাইতে অসুখী জিম্বাবুয়ের লোকজন। কেউ না বললেও তা বোঝা যায় । ২০০৬ সালেও তাই ছিল। সেবারই প্রথম এই সূচক তৈরি হয়। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার। প্রথমবার বাংলাদেশের অবস্থান একচল্লিশতম ছিল। এই কয় বছরে বাংলাদেশের অবস্থান দশ ধাপ এগিয়েছে। অনেক খারাপ খবরের মধ্যে এটি একটি নিশ্চয় ভাল খবর।
সুখী হওয়ার অনেক প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশন ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো তাদের এই সূচক প্রস্তুত করে। তারা বলে অর্থ আর বিত্ত থাকলেই মানুষ সুখী হবে তা নিছক একটি ভ্রান্ত ধারণা। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের প্রত্যাশা ধনী হওয়া নয় বরং সুখে থাকা, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া এবং আনন্দে থাকা। মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে বাঁচতে চায়, জীবনে কিছু অর্জন করতে চায়। এর জন্য তার প্রয়োজন তার নিজ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ, তার পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবহার এবং পরবর্তী প্রজন্মের দিকে লক্ষ্য রেখে নিজেদের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে বেপরোয়া প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করা হতে বিরত থাকা।
কোস্টারিকা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। এক পাশে তার প্রশান্ত মহাসাগর অন্য পাশে ক্যারিবিয়ান সাগর। প্রাকৃতিক সম্পদকে রক্ষা করার জন্য কোস্টারিকার আইন-কানুন খুবই শক্ত এবং তা প্রয়োগে কোন শিথিলতা নেই। সে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবা আর শিক্ষা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটিতে কোন সৈন্য বাহিনী নেই। এই প্রসঙ্গে আমি এলিজাবেথের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কীভাবে সম্ভব একটি দেশে তার নিজস্ব সৈন্য বাহিনী না থাকা? সোজা উত্তর এলিজাবেথের কার সঙ্গে যুদ্ধ করবে এই সেনা বাহিনী? আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সব সময় সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করি। এক সময় কোস্টারিকায়ও সেনা বাহিনী ছিল। ছোট তবে বেশ আধুনিক । তো তাদের তেমন কোন একটা কাজ না থাকাতে তারা কিছুদিন পর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দীর্ঘ দিনের জন্য নির্বাসনে পাঠাত এবং দেশটাকে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করত। ১৯৪৮ সালে জনগণই গণভোটে জানিয়ে দিল তাদের কোন সেনা বাহিনীর প্রয়োজন নেই। তা দেশটির সংবিধানের অনত্মর্ভুক্ত হলো এবং সে অবদি এমনটিই চলে আসছে। একটি বড় অনুৎপাদনশীল ব্যয়ের হাত থেকে দেশটি বেঁচে গেল । বিশ্বব্যাপী এমন একটি ব্যবস্থা কখনও যদি চালু হয় তখন সত্যি সত্যি বিশ্বশান্তিকে ঠেকিয়ে রাখা কঠিন হবে ।
কোস্টারিকার মাথাপিছু আয় দশ হাজার ডলারের বেশি হলেও দক্ষিণ আর মধ্য আমেরিকার অন্য দেশগুলোর তুলনায় ধরে নেয়া হয় এটি একটি মধ্য আয়ের দেশ। এ আয় দিয়ে তারা তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো সহজে পূরণ করতে পারে। পারিবারিক বন্ধন, প্রতিবেশীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সামাজিক বন্ধন কোস্টারিকাসহ এই সূচকের ওপরের দিকে যে সব দেশ আছে তাদের মধ্যে খুবই নিবিড়। এটিই হচ্ছে সামাজিক পুঁজি (Social Capital) যে দেশের সামাজিক পুঁজি যত বেশি সমৃদ্ধশালী এবং সুদৃঢ় হয় যে দেশের মানুষের মনে সুখটা বেশি থাকে বলে বিশ্বাস করা হয়। সেই সমাজে শান্তির আগমন দ্রুত হয় এবং তার অবস্থানও দীর্ঘ মেয়াদী হয়। নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে সামাজিক শান্তি বিশ্ব শান্তির পূর্ব শর্ত। কোস্টারিকার সাবেক (সম্প্রতি সে দেশে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে) নোবেল বিজয়ী প্রেসিডেন্ট অস্কার সানচেজ মনে করেন শান্তি কোন স্বপ্নের বিষয় নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজটি কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। আমরা আগে নিজেদের চারপাশের বিভেদগুলো মিটিয়ে ফেলতে হবে। শানত্মি প্রতিষ্ঠার যাত্রাটা অন্যকে দিয়ে শুরু না করে তা নিজেদের দিয়েই শুরু করতে হবে। শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারলে সুখ আসবেই।
আমি যখন আমার এক সহকর্মীকে বললাম সুখী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভাল। এক শ' তেতাল্লিশটি দেশের মধ্যে একত্রিশতম তখন সে চোখ অনেকটা কপালে তুলল। বিদ্যুত নেই, গ্যাস নেই, পানি নেই, ঘর থেকে বের হলেই যানজট, খুনখারাপি তো লেগেই আছে এখন সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকাদের আত্মহত্যা অথবা হত্যার হিড়িক। এমন একটা দেশের মানুষ কীভাবে সুখে থাকে? মন্তব্যটা একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। হ্যাঁ, সমস্যা আছে। সমস্যা নেই এমন কোন দেশ নেই। তারপরেও এ দেশের মানুষ অন্য অনেক ধনী দেশের মানুষের চাইতে কিছুটা সুখী আছে। অর্থ নেই, ধন নেই ঠিক তবে বাঙালীর বুক ভরা এখনও ভালবাসা আছে। সুযোগ পেলেই সে আনন্দ করতে চায়। প্রতিবেশীর সুখ-দুঃখের ভাগি হতে চায়।
ক'দিন আগে বাঙালীর নতুন বছর শুরু হলো পয়লা বৈশাখ দিয়ে। এ দিন সারা দেশ উৎসবে মেতে ছিল। শুনেছি এই আনন্দ-উৎসবে আমাদের পাশের দেশের শহর কলকাতা হতে প্রচুর মানুষ বাংলাদেশে এসেছিল বাঙালীর এই প্রাণের উৎসবে শামিল হতে। পশ্চিমবঙ্গে বাংলা আর বাঙালী হিন্দীর আগ্রাসনে কারও কারও মতে বিলুপ্তির পথে। ধানমন্ডির যে এলাকায় আমি থাকি ঠিক তার লাগোয়া একটা বিশাল এলাকায় লক্ষাধিক নিম্নবিত্ত আর নিম্নমধ্যবিত্তের বাস। সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। কেউ পোশাক তৈরির কারাখানায় চাকরি করে তো কেউ রিকসা চালায়। বাড়িতে ঠিকে-ঝিয়ের কাজ করে কয়েক শত । খন্ডকালীন মাদক ব্যবসায়ী আছে বেশ কিছু। ফেরিওয়ালা কয়েক শত। ছিনতাইকারি কয়েক ডজন যে আছে তা নির্দ্বিধায় বলা য়ায় । পহেলা বৈশাখে এলাকায় বেশ সাজ সাজ রব পড়েছিল। সূর্য ওঠার আগেই যেতে হবে ধানমন্ডি লেকপাড়ের রবীন্দ্র সরোবরে। সম্ভব হলে রমনা বটমূলে। লাল সাদা জামা কাপড় তো অধিকাংশই পরেছিল। কেউ কেউ কালো পাড়ের সাদা শাড়ি (একুশে ফেব্রুয়ারি) অথবা হলুদ শাড়ির হাল্কা লালপাড় (গায়ে হলুদ), কেউ বা বাসন্তি রঙের । ওই একটাই হয়তো তার আছে। তাতেই সই। আনন্দ বা সুখ তো আর লাল সাদা কাপড়ে বাঁধা থাকে না। আনন্দ প্রকাশের এমন দৃষ্টান্ত বিলেত-আমেরিকায় বিরল। সে সব দেশে সকলে ছুটছে। অর্থের পেছনে। ক্ষণিকের জন্য দাঁড়ানোর ফুরসত কারও নেই। বন্ধু, আত্মীয়স্বজন বা পরিচিত জন দেশ থেকে আসলে তার সঙ্গে দু'দন্ড কথা বলতে হলে উইকএন্ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। সে সব দেশে অযথা ভোগ (Conspicuous Consumption) এখন একটা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশন বলছে যে ভোগ সহজে পরিহার করা যায় তা না করাই ভাল। তাহলে অন্যের সুখ সৃষ্টিতে অবদান রাখা সম্ভব। এতে আনন্দ আছে ।
সুখ সূচক প্রস্তুতে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ওপর সব চাইতে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর যে সকল দেশ নির্বিচারে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করছে তার মধ্যে শিল্পোন্নত দেশগুলো অন্যতম। এই ধ্বংসের পেছনে অন্যতম কারণ অপ্রয়োজনীয় ভোগের সংস্কৃতির চর্চা আর লালন। এই রোগ বাংলাদেশের মতো জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল প্রাকৃতিক সম্পদের দেশেও ধীরে ধীরে সংক্রামিত হচ্ছে । নদী দূষণ, নদী দখল, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাশয় ভরাট, বনজসম্পদ ধ্বংস, মৎস সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ইত্যাদির কারণে হয়ত দেখা যাবে একদিন বাংলাদেশের অবস্থান আবার নিম্নগামী হচ্ছে। সেটি বন্ধ করতে হলে আমাদের এখনই সতর্ক হতে হবে।
নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রস্তুতিকৃত সূচকের অনেক সমালোচনা আছে। এর অন্যতম হচ্ছে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়টাকে তাদের পরিমাপে সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। তবে এটি অনস্বীকার্য যে এইগুলো অন্তর্ভুক্ত করে পরিমাপ করলে সে সূচক হয়ত আরও শুদ্ধ হতো। তবে একটি কথা বলা যায় আমাদের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দিক বিবেচনা করলে আমাদের দেশের মানুষ অনেক দেশের মানুষের চাইতে অনেক বেশি সুখী। সুখ জিনিসটা উপলব্ধির বিষয় নিজে ভোগ করার বিষয়। আৰরিক অর্থে তা প্রমাণ করা কিছুটা হয়ত কঠিন।
দুটি ঘটনার কথা বলি। বছর কয় আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগন্নাথ হলের টিভি কক্ষের ছাদ ধসে অসংখ্য ছাত্র আহত হলো। নিহতও অনেক। বিটিভিতে (তখনও প্রাইভেট চ্যানেল এদেশে চালু হয়নি) আহতদের জন্য রক্ত চেয়ে ঘোষণা দেয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সারা ঢাকা শহর যেন ভেঙ্গে পড়েছিল রক্ত দিতে। বয়স যখন আমার দশ মা কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে চলাচল রহিত। আমরা তিন ভাই বোনকে সামলাবে কে ? পাড়ার ফুফু আর দাদি বাবাকে অভয় দিলেন চিন্তার কারণ নেই। আমরা আছি না ? তিন মাস তারা আমাদের বাড়িতে এসে থাকলেন। তাদের সঙ্গে আমাদের রক্তের কোন সম্পর্ক নেই । এমন সহমর্মিতার উদাহরণ খুব বেশি দেশে কী পাওয়া যাবে ? এটি যদি সুখের মাপকাঠি না হয় তা হলে কী হবে ? তাইতো বলি এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।
যে সকল উপাদান একজন মানুষকে সুখী করে তার কোন কোনটা এখন হয়ত আমাদের দেশে হুমকির সম্মুখীন, যা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। 'এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি' বাক্যটি আমরা চিরদিন লালন করতে চাই।

ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০১০

লেখক : শিক্ষাবিদ।

No comments: