জামায়াতের শীর্ষ নেতারা 'এ' ক্যাটাগরির আসামি হবে
যুদ্ধাপরাধী বিচার
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছিল তাদের বিচারে সরকার গঠিত তদন্তকারী সংস্থা তিন ক্যাটাগরিতে তালিকা প্রস্তুত করছে। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের 'এ', জেলা পর্যায়ে 'বি' এবং উপজেলা পর্যায়ে নেতাদের 'সি' ক্যাটাগরি ধরে তালিকা করা হচ্ছে। যারা '৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদেরকেই তালিকাতে রাখা হচ্ছে। নিরপরাধ কোন ব্যক্তিকেই তালিকাতে আনা হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত তদন্তকারী সংস্থার কাছে যে সমস্ত তথ্য উপাত্ত দালিলিক প্রমাণ রয়েছে সেটা ধরেই সংস্থা অগ্রসর হচ্ছে। সরকার দ্রুত চাইলে তদন্তকারী সংস্থা দ্রুত তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। সরকারের ইচ্ছার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মীর কাশেম আলীসহ ২ সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধী দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। অন্য শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীরা কোনভাবেই পালাতে পারবে না। তাদের পালাবার কোন পথ নেই। বিচারের সম্মুখীন তাদের হতেই হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধসহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করতে সরকার ২৫ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুসারে বিচারক প্যানেল, তদন্তকারী সংস্থা এবং আইনজীবী প্যানেল গঠন করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের সহযোগী হিসেবে আলবদর, রাজাকার আর আল শামস বাহিনী গড়ে তোলে। যার সিংহভাগই হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য। বাদবাকি মুসলিম লীগ, নেজামী ইসলামীসহ অন্য দলের ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা যারা রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ও নির্দেশদাতা, তাদের হাতে লাখ লাখ বাঙালী নিহত হয়েছে। জেলা থানা থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে হানা দিয়েছে। যাদের ধরতে পেরেছে, তাদেরকে পাকিস্তনী সেনাবাহিনীর টর্চার সেলে এনে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এরা ধর্মের দোহাই দিয়েও মুক্তিযুদ্ধের সময় লুঙ্গি খুলে পরীক্ষা করেছে সে হিন্দু না মুসলিম। যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনী লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আর মহিলাদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। সে সমস্ত অকাট্য প্রমাণ এখন তদন্তকারী সংস্থার হাতে। তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত করেছে তাদের হাতে যে সমস্ত ডকুমেন্ট আছে তা দ্বারাই তাদের বিরুদ্ধে শতভাগ অভিযোগ আনতে পারবে।
ইতোমধ্যে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র বেশ কিছু দলিলপত্র হস্তান্তর করেছে তদন্ত কমিটির কাছে। এ ছাড়া তারা যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকাও দিয়েছে। একই সঙ্গে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ৫০ জন যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা করেছে।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ১৭৭৫ জনের তালিকা দিয়েছে। এই তালিকার মধ্যে অনেকেই মৃত।
সেদিক বিবেচনা করে তারা নতুন আরেকটি তালিকা করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেই তালিকায় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীসহ প্রায় ৫ শতাধিক নাম থাকবে।
তদন্তকারী সংস্থা সব তালিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম প্রাথমিক পর্যায়ে যে ৫০ জনের নামের তালিকা করেছে। সেটার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিভিন্ন বিমানবন্দরসহ সীমান্তগুলোতে সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকা পাঠিয়েছে, যাতে করে যুদ্ধাপরাধীরা কোন অবস্থাতেই বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে।
১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ আইন পাস হয়। বিল আকারে আইনটি উপস্থাপন করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর। মনোরঞ্জন ধর জাতীয় সংসদে গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অন্যান্য অপরাধে অপরাধী ব্যক্তিদের আটক করার ফৌজদারিতে সোপর্দ করার এবং দণ্ড দায়ের উদ্দেশ্যে একটি বিল উত্থাপন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় দালাল আইনে ৩৭ হাজার দালালকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৩ সালে নবেম্বর মাসে দালাল আইনে আটককৃতদের মধ্য থেকে ২৬ হাজার দালালকে সাধারণ ৰমা ঘোষণা করা হয়। এরপর ১১ হাজার দালাল দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর সব দালালকে মুক্ত করেছেন জিয়াউর রহমান। এরপর বিভিন্ন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
অবশেষে মহাজোট ৰমতায় আসার পর '৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, ৰমতায় গেলে তার সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। তারই ধারাবাহিকতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে যাচ্ছে।
তদন্তকারী সংস্থার প্রধান আব্দুল মতিন জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কাজের অগ্রগতি ভাল। ১৯৭১ সালে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। সে ৰেত্রে জামায়াতের শীর্ষ নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ অন্যরা তো থাকবেই। কারণ তারাই '৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল। তাদের কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
অন্যদিকে চীপ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন, তদন্ত সংস্থা কাজ করছে। তারা আমাদের কাছে রিপোর্ট দিলেই তা ট্রাইব্যুনালের কাছে তুলে ধরব। আশা করছি অতি দ্রুততার সঙ্গেই কাজ এগিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধসহ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করতে সরকার ২৫ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুসারে বিচারক প্যানেল, তদন্তকারী সংস্থা এবং আইনজীবী প্যানেল গঠন করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের সহযোগী হিসেবে আলবদর, রাজাকার আর আল শামস বাহিনী গড়ে তোলে। যার সিংহভাগই হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর সদস্য। বাদবাকি মুসলিম লীগ, নেজামী ইসলামীসহ অন্য দলের ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা যারা রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ও নির্দেশদাতা, তাদের হাতে লাখ লাখ বাঙালী নিহত হয়েছে। জেলা থানা থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে হানা দিয়েছে। যাদের ধরতে পেরেছে, তাদেরকে পাকিস্তনী সেনাবাহিনীর টর্চার সেলে এনে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এরা ধর্মের দোহাই দিয়েও মুক্তিযুদ্ধের সময় লুঙ্গি খুলে পরীক্ষা করেছে সে হিন্দু না মুসলিম। যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনী লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আর মহিলাদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। সে সমস্ত অকাট্য প্রমাণ এখন তদন্তকারী সংস্থার হাতে। তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত করেছে তাদের হাতে যে সমস্ত ডকুমেন্ট আছে তা দ্বারাই তাদের বিরুদ্ধে শতভাগ অভিযোগ আনতে পারবে।
ইতোমধ্যে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র বেশ কিছু দলিলপত্র হস্তান্তর করেছে তদন্ত কমিটির কাছে। এ ছাড়া তারা যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকাও দিয়েছে। একই সঙ্গে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ৫০ জন যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা করেছে।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ১৭৭৫ জনের তালিকা দিয়েছে। এই তালিকার মধ্যে অনেকেই মৃত।
সেদিক বিবেচনা করে তারা নতুন আরেকটি তালিকা করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেই তালিকায় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীসহ প্রায় ৫ শতাধিক নাম থাকবে।
তদন্তকারী সংস্থা সব তালিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম প্রাথমিক পর্যায়ে যে ৫০ জনের নামের তালিকা করেছে। সেটার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিভিন্ন বিমানবন্দরসহ সীমান্তগুলোতে সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধীদের একটি তালিকা পাঠিয়েছে, যাতে করে যুদ্ধাপরাধীরা কোন অবস্থাতেই বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে।
১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এ্যাক্ট ১৯৭৩ আইন পাস হয়। বিল আকারে আইনটি উপস্থাপন করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর। মনোরঞ্জন ধর জাতীয় সংসদে গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অন্যান্য অপরাধে অপরাধী ব্যক্তিদের আটক করার ফৌজদারিতে সোপর্দ করার এবং দণ্ড দায়ের উদ্দেশ্যে একটি বিল উত্থাপন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় দালাল আইনে ৩৭ হাজার দালালকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৩ সালে নবেম্বর মাসে দালাল আইনে আটককৃতদের মধ্য থেকে ২৬ হাজার দালালকে সাধারণ ৰমা ঘোষণা করা হয়। এরপর ১১ হাজার দালাল দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর সব দালালকে মুক্ত করেছেন জিয়াউর রহমান। এরপর বিভিন্ন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
অবশেষে মহাজোট ৰমতায় আসার পর '৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, ৰমতায় গেলে তার সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। তারই ধারাবাহিকতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে যাচ্ছে।
তদন্তকারী সংস্থার প্রধান আব্দুল মতিন জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কাজের অগ্রগতি ভাল। ১৯৭১ সালে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। সে ৰেত্রে জামায়াতের শীর্ষ নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ অন্যরা তো থাকবেই। কারণ তারাই '৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল। তাদের কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ আমাদের হাতে আছে।
অন্যদিকে চীপ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন, তদন্ত সংস্থা কাজ করছে। তারা আমাদের কাছে রিপোর্ট দিলেই তা ট্রাইব্যুনালের কাছে তুলে ধরব। আশা করছি অতি দ্রুততার সঙ্গেই কাজ এগিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2010-04-12&ni=14624
No comments:
Post a Comment