বিচারের দিনপঞ্জি
৬ এপ্রিল
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বিচারে পাকিস্তান কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ওই দেশের হাইকমিশনার আশরাফ কোরেশী।
সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কোরেশী বলেন, 'এ বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না।' পাকিস্তান এই বিচারের বিরোধিতা কিংবা বিচার যেন না হয়, সে ব্যাপারে কোনো ধরনের লবিং করছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
৭ এপ্রিল
গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মতো শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এই দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি তদন্ত সংস্থার কাছে জমা দেন সংগঠনের সদস্য-সচিব এমদাদ হোসেন মতিন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এদিন বেশ কিছু দলিল তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য, দালিলিক প্রমাণ ও গ্রন্থ তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, বিভিন্ন অপরাধীর বিষয়ে তদন্ত সংস্থার কাছে যে রিপোর্ট আছে, যারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ছিল তাদের গ্রেপ্তার করা যেতে পারে এবং গ্রেপ্তার করা উচিতও।
৯ এপ্রিল
জঙ্গিদের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ এবং অবিলম্বে এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎস বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এসব আয়ের উৎস বন্ধ করতে না পারলে জামায়াত যুদ্ধাপরাধবিরোধী বিচার ঠেকাতে বিভিন্ন হামলা চালাবে।
১০ এপ্রিল
দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও কূটনীতিকরা বলেছেন, স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এমনকি অনেক মন্ত্রীও কোনো এখতিয়ার না থাকলেও প্রতীকি বিচার হবে বলে ভুল প্রচার করছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৩৯তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে বিকালে রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত সভার এ অভিযোগ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী।
১১ এপ্রিল
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরেজমিন দেখতে এদিন আকস্মিক দর্শনার্থী হিসেবে হাজির হয়েছিল দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। পুরনো হাইকোর্ট ভবনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনাল তারা ঘুরে দেখেছে এবং কথা বলেছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ভৈরবের ১৯টি স্কুলের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়। শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে তারা হাইকোর্ট ভবনসহ ট্রাইব্যুনাল ঘুরে দেখে। শিক্ষার্থীরা আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু ও প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিনের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধসহ নানা বিষয়ে তাঁদের প্রশ্ন করে।
ক্ষুদে দর্শনার্থী প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু বলেন, আমরা খুবই খুশি। শিক্ষার্থীরাও চায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে তাদের বিচার হোক। তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিকশিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের বিচার নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করবে।
প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিন জানিয়েছেন, একাত্তরে বিভিন্ন অপরাধে যুক্তদের ব্যাপারে তথ্য প্রদানে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা তদন্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেক শহীদ পরিবার চিঠির মাধ্যমে ও মুক্তিযোদ্ধারা এসে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো ছাড়াও ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
১৩ এপ্রিল
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে সৌদি সরকার এখন পর্যন্ত কোনো নেতিবাচক মনোভাব দেখায়নি। এ বিচার হলে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কেরও অবনতির কোনো আশঙ্কা নেই। বরং আগামীতে সৌদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করতে চায়। 'এ বিচার হলে বাংলাদেশ সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানির বাজার হারাবে'_এই প্রচারণাকে ভিত্তিহীন আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ বিন নাসের আল বুসাইরী।
বুসাইরী গতকাল টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে সৌদি আরবকে জড়ানো ঠিক হচ্ছে না। '৭১ সালের ঘটনার বিচারের সঙ্গে সৌদি আরবের কোনো সম্পর্ক নেই।' তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে সৌদি আরবকে সম্পৃক্ত না করতে দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও প্রচার মাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দলেরই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই।' সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরও দূতাবাস থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে এবং একই বিষয় আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানিয়েছি।'
১৭ এপ্রিল
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের ভূমিকা নিয়ে লুকোচুরি করবে না জামায়াতে ইসলামী। দলের নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জামায়াতের ইসলামীর জেলা আমির সম্মেলনে তৃণমূলের নেতাদেরও একই কৌশল অনুসরণ করতে বলেছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বৈরী পরিস্থিতির শিকার হচ্ছিল। এ বিষয়ে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একাত্তরে আমাদের ভূমিকা নিয়ে কোনোদিনও লুকোচুরি করিনি। আমরা পাকিস্তানের অবকাঠামোর পক্ষে ছিলাম, কিন্তু পাকিস্তানের কাঠামো ভেঙে যাওয়ার পর এক মুহূর্তের জন্যও আমরা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলাম না। গোলাম আযম সাহেবও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী আমির সম্মেলনে প্রথমবাবের মতো স্বীকার করেন, 'একাত্তরে জামায়াত আন্তরিকভাবে পাকিস্তানকে এক রাখার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এ চেষ্টা বাস্তব ছিল না।'
গ্রন্থনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি
৬ এপ্রিল
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বিচারে পাকিস্তান কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ওই দেশের হাইকমিশনার আশরাফ কোরেশী।
সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কোরেশী বলেন, 'এ বিচার প্রক্রিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের হস্তক্ষেপের প্রশ্নই আসে না।' পাকিস্তান এই বিচারের বিরোধিতা কিংবা বিচার যেন না হয়, সে ব্যাপারে কোনো ধরনের লবিং করছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
৭ এপ্রিল
গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মতো শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এই দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি তদন্ত সংস্থার কাছে জমা দেন সংগঠনের সদস্য-সচিব এমদাদ হোসেন মতিন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এদিন বেশ কিছু দলিল তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য, দালিলিক প্রমাণ ও গ্রন্থ তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, বিভিন্ন অপরাধীর বিষয়ে তদন্ত সংস্থার কাছে যে রিপোর্ট আছে, যারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ছিল তাদের গ্রেপ্তার করা যেতে পারে এবং গ্রেপ্তার করা উচিতও।
৯ এপ্রিল
জঙ্গিদের অর্থ জোগানদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ এবং অবিলম্বে এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎস বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এসব আয়ের উৎস বন্ধ করতে না পারলে জামায়াত যুদ্ধাপরাধবিরোধী বিচার ঠেকাতে বিভিন্ন হামলা চালাবে।
১০ এপ্রিল
দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও কূটনীতিকরা বলেছেন, স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এমনকি অনেক মন্ত্রীও কোনো এখতিয়ার না থাকলেও প্রতীকি বিচার হবে বলে ভুল প্রচার করছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৩৯তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে বিকালে রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত সভার এ অভিযোগ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী।
১১ এপ্রিল
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরেজমিন দেখতে এদিন আকস্মিক দর্শনার্থী হিসেবে হাজির হয়েছিল দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। পুরনো হাইকোর্ট ভবনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনাল তারা ঘুরে দেখেছে এবং কথা বলেছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ভৈরবের ১৯টি স্কুলের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়। শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে তারা হাইকোর্ট ভবনসহ ট্রাইব্যুনাল ঘুরে দেখে। শিক্ষার্থীরা আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু ও প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিনের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধসহ নানা বিষয়ে তাঁদের প্রশ্ন করে।
ক্ষুদে দর্শনার্থী প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান গোলাম আরিফ টিপু বলেন, আমরা খুবই খুশি। শিক্ষার্থীরাও চায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে তাদের বিচার হোক। তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিকশিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালের বিচার নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করবে।
প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিন জানিয়েছেন, একাত্তরে বিভিন্ন অপরাধে যুক্তদের ব্যাপারে তথ্য প্রদানে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা তদন্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেক শহীদ পরিবার চিঠির মাধ্যমে ও মুক্তিযোদ্ধারা এসে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো ছাড়াও ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
১৩ এপ্রিল
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে সৌদি সরকার এখন পর্যন্ত কোনো নেতিবাচক মনোভাব দেখায়নি। এ বিচার হলে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কেরও অবনতির কোনো আশঙ্কা নেই। বরং আগামীতে সৌদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করতে চায়। 'এ বিচার হলে বাংলাদেশ সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানির বাজার হারাবে'_এই প্রচারণাকে ভিত্তিহীন আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ বিন নাসের আল বুসাইরী।
বুসাইরী গতকাল টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে সৌদি আরবকে জড়ানো ঠিক হচ্ছে না। '৭১ সালের ঘটনার বিচারের সঙ্গে সৌদি আরবের কোনো সম্পর্ক নেই।' তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে সৌদি আরবকে সম্পৃক্ত না করতে দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও প্রচার মাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দলেরই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই।' সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরও দূতাবাস থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে এবং একই বিষয় আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানিয়েছি।'
১৭ এপ্রিল
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের ভূমিকা নিয়ে লুকোচুরি করবে না জামায়াতে ইসলামী। দলের নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জামায়াতের ইসলামীর জেলা আমির সম্মেলনে তৃণমূলের নেতাদেরও একই কৌশল অনুসরণ করতে বলেছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা নিয়ে দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বৈরী পরিস্থিতির শিকার হচ্ছিল। এ বিষয়ে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একাত্তরে আমাদের ভূমিকা নিয়ে কোনোদিনও লুকোচুরি করিনি। আমরা পাকিস্তানের অবকাঠামোর পক্ষে ছিলাম, কিন্তু পাকিস্তানের কাঠামো ভেঙে যাওয়ার পর এক মুহূর্তের জন্যও আমরা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলাম না। গোলাম আযম সাহেবও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী আমির সম্মেলনে প্রথমবাবের মতো স্বীকার করেন, 'একাত্তরে জামায়াত আন্তরিকভাবে পাকিস্তানকে এক রাখার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এ চেষ্টা বাস্তব ছিল না।'
গ্রন্থনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি
No comments:
Post a Comment