Saturday, April 10, 2010

জাল টাকা ও চোরাচালান অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জঙ্গীরা

জাল টাকা ও চোরাচালান অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে জঙ্গীরা
________________________________________
স্টাফ রিপোর্টার বাংলাদেশে জাল টাকা ও চোরাচালান ব্যবসার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে দেশী-বিদেশী জঙ্গীরা। গ্রেফতারকৃত লস্কর-ই-তৈয়বার পাকিসত্দানী জঙ্গী মুবাশ্বের জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা হয়েছে। মুবাশ্বেরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা দেশী-বিদেশী জঙ্গীদের তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। মুবাশ্বেরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা এদেশীয় অধিকাংশ জঙ্গীই জাল টাকা ও চোরাচালান ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
শুক্রবার সূত্রাপুর থানা পুলিশ মুবাশ্বের ওরফে ইয়াহিয়াকে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তার বিরম্নদ্ধে সূত্রাপুর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, সন্ত্রাস দমন আইনে ও জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে বিদেশী জঙ্গী সংগঠনের তৎপরতা শুরম্ন হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা, জৈইশ-ই-মোহাম্মদ, জইশ-ই-মোসত্দফা, ভারতের কামতাপুরি লিবারেশন ফ্রন্ট, অসমের বিচ্ছিন্নতাবাদী উগ্রপন্থী দল উলফা, কাশ্মীরের আসিফ রেজা কমান্ডো ফোর্সসহ বহু জঙ্গী ও উগ্রপন্থী দল ঘাঁটি গাড়ে। এসব বিদেশী জঙ্গী ও উগ্রপন্থী দলগুলোর সঙ্গে এদেশীয় জঙ্গী সংগঠন হুজি, জেএমবি, হিযবুত তাহরীর, আল্লাহর দল, সচেতন সমাজসহ অস্তিত্বশীল সব জঙ্গী সংগঠনের জঙ্গীরা যোগাযোগ গড়ে তোলে।
বাংলাদেশের আমেরিকান ও ভারতীয় দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ডিবি পুলিশ গত বছরের ১২ নবেম্বর গাজীপুর ও টঙ্গী থেকে লস্কর-ই-তৈয়বার পাকিসত্দানী জঙ্গী সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম আজহারী ওরফে সুফিয়ান, মোহাম্মদ আশরাফ ওরফে জাহিদ ও মোহাম্মদ মনোয়ার আলী ওরফে মনোয়ারকে গ্রেফতার করে। এছাড়া গত ১৮ জানুয়ারি ডিবি পুলিশ রাজধানীর মালিবাগ মৌবন হোটেল থেকে জাল মুদ্রা ব্যবসায়ী দলের নেতা লস্কর-ই-তৈয়বার পাকিস্তানী জঙ্গী মোহাম্মদ দানিশ ও মোহাম্মদ সাব্বির আলীকে গ্রেফতার করে। দানিশের পিতার নাম সোহেল আহম্মেদ (মৃত)। তার বাড়ি পাকিস্তানের লাহোর জেলার আনারকলি থানার আনারকলি গেটের ৩৭৩/ডি নম্বরে। সাবি্বর আলীর পিতার নাম ফাইয়াজ আলী। তার বাড়ি পাকিসত্দানের করাচী জেলার করেঙ্গী থানার করেঙ্গী গ্রামের আর-২৮৩ নম্বরে। এছাড়া লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ নেতা মুফতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞ মনসুর আলী ও মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানির অন্যতম সহযোগী ও বিশ্বখ্যাত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব গুলশান কুমার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও দাউদ ইব্রাহিমের অন্যতম সহযোগী আব্দুর রউফ দাউদ মার্চেন্ট ও জাহিদ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃতরা সবাই বাংলাদেশে জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এসব জাল টাকায় বাংলাদেশের চোরাচালান ব্যবসার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রিত হয়। জাল টাকার ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হয় দেশীয় জঙ্গীদের পেছনে। সর্বশেষ গত ৭ এপ্রিল র্যাব রাজধানীর সূত্রাপুর থানাধীন চানখাঁরপুল এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার পাকিস্তানী জঙ্গী মোহাম্মদ মুবাশ্বের শরীফ ওরফে মুবিন ওরফে ইয়াহিয়াকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকার জালনোট উদ্ধার হয়েছে। তার পিতার নাম মোহাম্মদ শাহেদ শামসি। জন্ম পাকিসত্দানের করাচীর ওয়ালেস গেটে। মুবাশ্বের ১৩ বছর বয়সে অর্থাৎ ১৯৯৮ সাল থেকে সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে জড়িত। সে ব্যবসার আড়ালে এদেশীয় জঙ্গী সংগঠনগুলোকে সংগঠিত করছিল। সে ২০০৬ সালের অক্টোবর থেকে বায়িং ব্যবসার আড়ালে এ কাজ করে আসছিল। ইতোপূর্বেম গ্রেফতারকৃত বিদেশী জঙ্গীরা বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এদেশে প্রবেশ করে এবং প্রচুর সুযোগ-সুবিধাও পেয়েছে। মুবাশ্বেরের সঙ্গে দেশী-বিদেশী অনেক জঙ্গীর যোগাযোগ রয়েছে। এসব জঙ্গী বাংলাদেশে জাল টাকা ও চোরাচালান ব্যবসার অধিকাংশই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2010-04-10&ni=14395

No comments: